নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী থেকে আমরা অনুপ্রেরণা লাভ করতে পারি কীভাবে ইতিবাচক মনোভাব অবলম্বন করতে হয়
আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস ও ধৈর্য

বিরোধীদের নির্যাতন, উপহাস এবং শারীরিক নিগ্রহের মুখোমুখি হলেও নবী (সাঃ) অটল থেকেছিলেন এবং আল্লাহর পরিকল্পনায় বিশ্বাস রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “মুমিনের জীবন অদ্ভুত, তার সমস্ত কাজই কল্যাণকর। এটা শুধুমাত্র মুমিনের জন্যই প্রযোজ্য। যদি তাকে কোনো সুখকর বিষয় ঘটে, সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং এটা তার জন্য কল্যাণকর; আর যদি তাকে কোনো অপ্রিয় বিষয় ঘটে, সে ধৈর্য ধারণ করে এবং এটাও তার জন্য কল্যাণকর।” তাঁর অটল মনোবল এবং আল্লাহর প্রজ্ঞায় বিশ্বাস তাঁকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে সক্ষম করেছিল।
দয়া ও করুণার আলো বিকীর্ণ করা
নবী (সাঃ) এর ইতিবাচক মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছিল অন্যদের প্রতি তাঁর দয়ালু আচরণে, এমনকি তাঁর কটমট শত্রুদের প্রতিও। তিনি প্রায়শই হাসতেন, সকলের কাছে সহজলভ্য ছিলেন এবং কখনও রাগে কাউকে আঘাত করতেন না। তাঁর নম্র এবং ক্ষমাশীল প্রকৃতি মানুষের অন্তর পরিবর্তন করেছে এবং দয়া ও করুণার মাধ্যমে ইসলামের আলো ছড়িয়েছে। আনাস ইবন মালিক বর্ণনা করেছেন, “আমি দশ বছর নবীর সেবা করেছি, তিনি কখনও আমাকে ‘উফ’ (অসন্তোষের একটি সামান্য কঠোর শব্দ) বলেননি এবং কোনো কিছুর জন্য আমাকে দোষারোপ করেননি।”
সমাধানমুখী দৃষ্টিভঙ্গী
নবী (সাঃ) এর দৃষ্টিভঙ্গী ছিল সমাধানমুখী, সমস্যার চেয়ে সমাধানের উপর মনোনিবেশ করা। মক্কায় সামাজিক বয়কটের সম্মুখীন হলে তিনি প্রতিশোধ নেননি বরং তাঁর সাহাবীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন একটি খাঁদ খনন করে আশ্রয় এবং খাদ্য সংগ্রহ করতে। তাঁর ইতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং কর্মপন্থা বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে ইসলামের বাণী প্রচারে সাফল্য অর্জনের পথ প্রশস্ত করেছিল।
নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবন প্রমাণ করে যে, অন্ধকার পরিস্থিতিতেও ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা সম্ভব। আল্লাহর প্রতি তাঁর অবিচল বিশ্বাস, সকলের প্রতি দয়া এবং সমাধানমুখী দৃষ্টিভঙ্গী মুমিনদের জন্য একটি চিরন্তন আদর্শ রচনা করেছে যাতে তারা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করে জীবনের বাধাবিপত্তি অতিক্রম করতে পারে আশা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে।